শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৩২
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাড়বে গরম, চোখের নানান সমস্যা থেকে সাবধান : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী আঠালো মাটি ফুঁড়ে জন্মানো শৈশব : আনন্দগোপাল হালদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আম্বেদকর প্রসঙ্গে বিজেপি দলিত বিরোধী তথা মনুবাদী রূপ প্রকাশ করে ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ১৯৭ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

চার সপ্তাহ ধরে নানা নাটকীয় ঘটনায় শুক্রবার শেষ হল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। বলাই বাহুল্য একাধিক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এবারের শীতকালীন অধিবেশন। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার যে ভাবে ভীমরাও রামজি আম্বেদকর নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিজেপি এবং বিরোধী সাংসদরা যেভাবে হাতাহাতিতে মত্ত হয়েছিলেন, তা বস্তুত সংসদের ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবিধানের ৭৫ বছরের গৌরবময় যাত্রা নিয়ে সরকারের জবাবি ভাষণের দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন অমিত শাহের নির্ভরশীল কাঁধে। কিন্তু সংসদের সেই মঞ্চেই তিনি তুমুল বিতর্কের বিস্ফোরণ ঘটালেন বাবাসাহেব আম্বেদকর সম্পর্কে মন্তব্যে। বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি দেশের সংবিধান প্রণেতাকে নিয়ে এমন এক মন্তব্য করে বসলেন যে দেশজুড়ে শুরু হয়ে গেল তোলপাড়। সংসদের দুই কক্ষই দফায় দফায় মুলতুবি হল। বিরোধীরা একজোট হয়ে দাবি তুললেন, আম্বেদকরকে অপমান করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে হবে। ক্ষমা চাইতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হল স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীকে। এমন কি বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যাতে বিরোধীদের আক্রমণ এত তীব্র হয়ে উঠল।

অমিত শাহের বিতর্কিত মন্তব্যটি ছিল, ‘আজকাল এক ফ্যাশন হয়েছে। সারাক্ষণ আম্বেদকর… আম্বেদকর… আম্বেদকর…। এতবার যদি ঈশ্বরের বন্দনা করতেন, সাত জন্মের স্বর্গবাসের পুণ্য অর্জন হয়ে যেত!’ ব্যাস! এহেন মন্তব্যে সব সীমা ছাড়িয়ে গেল এবং তার জেরে ফুঁসে উঠল গোটা দেশ। বুঝতে কারও অসুবিধা হল না যে বিজেপি তার দলিত বিরোধী তথা মনুবাদী প্রকৃত রূপ প্রকাশ করে ফেলেছে। ডেরেক ও’ব্রায়েন রাজ্যসভায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে ‘স্বাধিকার ভঙ্গে’র নোটিস দেন। তৃণমূল ওয়াক আউট করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে তোপ দাগেন, ‘বিজেপির দলিত বিরোধী, জাতপাতের মানসিকতা সামনে এসে গিয়েছে। অবশ্য যারা ঘৃণা আর ধর্মান্ধতাকে উস্কায়, তাদের থেকে কীই বা আশা করা যায়? ২৪০ আসন পেয়েই যদি বিজেপি এমন অপমান করতে পারে, তাহলে ৪০০ পেলে কী হতো?’ রাহুল গান্ধী প্রায় একই সুরে আক্রমণ করে বলেন, ‘এই অপমান সহ্য করব না। সংবিধান বদলে দেওয়াই নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য।’ বিরোধীদের এই সব আক্রমনের পাশাপাশি লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, আরএসএস’ও অমিত শাহের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। সেটা বেশ ভাল করে বুঝতে পেরেই বিরোধীরা দ্বিগুণ আক্রমণ শুরু করে। সংসদ চত্বরে রাহুল-প্রিয়াঙ্কার নেতৃত্বে আম্বেদকরের ছবি নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয় ডিএমকে, জেএমএম, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টির মতো ‘ইন্ডিয়া’র শরিকরা। ঘনঘন স্লোগান ওঠে, ‘জয় ভীম। অমিত শাহ মাফি মাঙ্গো।’ সামনেই দিল্লি এবং বিহার ভোট। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব সেটা ভেবেই আতঙ্কিত যে ভোটের আগে অনগ্রসর ভোটব্যাঙ্কের কাছে আম্বেদকর-বিরোধী ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হলে কী পরিণতি হবে? তাই বিকেল বেলায় অমিত শাহ নিজেই সাফাই দিতে নেমে বলেন, ‘আমার ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। আমরা আম্বেদকরকে অপমান করতেই পারি না। এটা কংগ্রেসের নোংরা রাজনীতি।’

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা উত্তর প্রায় তিন দশক কাল ধরে দলিতদের ভোট একচ্ছত্র ভাবে পেয়ে এসেছে কংগ্রেস। ভীমরাও রামজি আম্বেদকর নেহরুর মন্ত্রিসভার আইনমন্ত্রী ছিলেন। কংগ্রেসের ভোট সমীকরণে যেমন মুসলিম ও ব্রাহ্মণ তথা উচ্চবণের্র ভোট ছিল পাশাপাশি দলিতদের ভোট নিয়ে জয়ের জন্য একইরকম সমীকরণ ছিল। যদিও পরবর্তী কালে সেই দলিত ভোটে যথেষ্ট ভাঁটা পড়ে। দলিতদের চাওয়া পাওয়াকে উস্কে দিয়ে দেশ জুড়ে বহুজন সমাজ পার্টি থেকে শুরু করে ছোট বড় একাধিক দলিত দল তৈরি হয়। কংগ্রেস এখন আর একচ্ছত্র নয়, দলিত ভোটের ছিঁটেফোঁটা পায়। স্বভাবতই আম্বেদকারের অসম্মান ও অবমাননায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদে নেমেছে। কংগ্রেসের কথা মতো কংগ্রেস তথা নেহরুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল আম্বেদকারের। আম্বেদকার কংগ্রেস বিরোধী ছিলেন, নেহরুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল না-দলিত দলগুলি মিথ্যা প্রচার করে। কংগ্রেসের সঙ্গেই নেহরুরু মতাদর্শগত মিল ছিল। পরে তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষণ নীতি চালু করে সরকার। এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, প্রত্যেকের উদ্দেশ্য দলিত ভোট কাছে টানা। অতীতে বিজেপি দলিত নেতা বঙ্গারু লক্ষণকে সভাপতি করেছিল ঠিকই কিন্তু আম আদমি বিজেপিকে উচ্চবণের্র হিন্দু দল বলেই জানে। লোকসভা ভোটে মোদী দলিত ভোট টানতে সক্ষম হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু সরকার গঠনের দশ মাসের মাথায় সঙ্ঘ ও বিজেপির যৌথ সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সেই ভোট শতাংশ তারা ধরে রাখতে পারছে না। তাই দলিত ভোট ব্যাঙ্ককে স্থায়ী আমানত করতে কেবল বিরোধিরা নয় বিজেপিও এখন সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপ দিয়েছে।

ইতিমধ্যে অমিত শাহের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও বিজেপির অন্দর মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব সরকারের দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার প্রবল চেষ্টা করছে ঠিকই কিন্তু বিরোধীরা অমিত শাহকে আম্বেদকর তথা দলিত বিরোধী হিসেবে যেভাবে প্রচার চালাচ্ছে, তাতে বিজেপির আশঙ্কা বাড়ছে। বিজেপির উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং মহারাষ্ট্র শাখা থেকে ইতিমধ্যে বার্তা মিলছে তাতে দেখা যাচ্ছে অমিত শাহের বক্তব্য নিয়ে বিরোধীরা রাজ্যে রাজ্যে প্রচারে নেমেছে। কেবল বিরোধী জোট নয়, বিজেপির বন্ধু দল ও জোট শরিকরাও এই ইস্যুতে হাত তুলে নিয়েছে। আগামী বছর বিহারে ভোট, তার আগে অমিত শাহ যেভাবে আম্বেদকর নিয়ে মন্তব্য করেছেন তা চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপি এবং তাদের বন্ধু দলগুলিকে। ফলে বিজেপির একজনও জোট শরিক সরাসরি এই ইস্যুতে বিজেপির পাশে নেই। আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইতিমধ্যে নীতীশকুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুকে চিঠি লিখে বলেছেন, অমিত শাহ আম্বেদকরকে নিয়ে যে চরম অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন, আপনারা কি সেই মন্তব্যকে সমর্থন করেন? আপনারা কি এই দলিত বিরোধী সরকার ও দলকে সমর্থন করে যাবেন? স্বাভাবিকভাবেই এতে মোদি সরকারের দুই প্রধান জোট শরিক রীতিমতো ধর্ম সঙ্কটে পড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন