বৃহস্পতিবার | ১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৫৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস কন্নড় মেল্ল থেকেই সিন্ধুসভ্যতার ভূখণ্ডের প্রাচীন নাম মেলুহা : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (তৃতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস লোকভুবন থেকে রাজনীতিভুবন : পুরুষোত্তম সিংহ চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (দ্বিতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত রবীন্দ্রনাথের ইরান যাত্রা : অভিজিৎ ব্যানার্জি ঠাকুরকে ঠাকুর না বানিয়ে আসুন একটু চেনার চেষ্টা করি : দিলীপ মজুমদার যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী ও শান্তিনিকেতন : প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বাঙালী রবীন্দ্রনাথ : সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক দূর পর্যন্ত ভেবেছিলেন আমাদের ঠাকুর : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথের প্রথম ইংরেজি জীবনী : সুব্রত কুমার দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (প্রথম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস শুক্লাম্বর দিঘী, বিশ্বাস করে দিঘীর কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায় : মুন দাশ মোহিনী একাদশীর ব্রতকথা ও মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত নিজের আংশিক বর্ণান্ধতা নিয়ে কবিগুরুর স্বীকারোক্তি : অসিত দাস ঝকঝকে ও মজবুত দাঁতের জন্য ভিটামিন : ডাঃ পিয়ালী চ্যাটার্জী (ব্যানার্জী) সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা : লুৎফর রহমান রিটন সংস্কৃতি জগতের এক নক্ষত্রের নাম বসন্ত চৌধুরী : রিঙ্কি সামন্ত আংশিক বর্ণান্ধতাজনিত হীনম্মন্যতাই রবীন্দ্রনাথের স্কুল ছাড়ার কারণ : অসিত দাস পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী : তপন মল্লিক চৌধুরী সাত্যকি হালদার-এর ছোটগল্প ‘ডেলিভারি বয়’ নব নব রূপে এস প্রাণে : মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সতীর ৫১ পীঠের (শক্তিপীঠ) শুলুক সন্ধানে (চতুর্থ পর্ব) : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়

জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় / ৫৬৯ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২

পীঠনির্ণয়তন্ত্র মতে ৫১ পীঠ বলা হয়। আমি পীঠনির্ণয়তন্ত্র অনুসরণ করেই লেখেছি। দেবী ভাগবত পুরাণে ১০৮ পীঠের কথা আছে। তন্ত্রচূড়ামণি তে ৫১ পীঠ ও ২ টি উপ পীঠের কথা আছে। শিবচরিত শাস্ত্রে ৫১ পীঠ ও ২৬ উপ পীঠের কথা আছে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ৫১ পীঠ বলা হয়। শক্তিপীঠ বলতে যা ব্যাখ্যা আমি পেয়েছি তা হলো দেবীর শরীরের অংশ যেখানে যেখানে পরেছে তা সতীপীঠ, অলঙ্কার ও অন্যান্য জনিষ যেখানে পরেছে তা উপপীঠ। আর বাকি সব সিদ্ধপীঠ।

পশুপতিনাথ (গুহ্যেশ্বরী মন্দির) : পশুপতিনাথ শৈবতীর্থ রূপেই আমাদের কাছে বেশী প্রসিদ্ধ। কিন্তু, শক্তিপীঠ রূপেও এই স্থানের মাহাত্ম্য বিপুল। এখানে দেবীর উভয় হাঁটু পতিত হয়। দেবী মহাশিরা নামে পূজিতা। ভৈরবের নাম কপালী। এই মন্দির গুহ্যেশ্বরী মন্দির নামেও পরিচিত।

চন্দ্রনাথ পাহাড় : বাংলাদেশের চিটাগাঙে সীতাকুণ্ড স্টেশনের কাছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে এই তীর্থস্থান। পাহাড়ের ওপরে আছে চন্দ্রনাথ মন্দির। এখানে দেবীর দক্ষিণ হস্ত পতিত হয়। দেবী এখানে ভবানী নামে পূজিতা। ভৈরবের নাম চন্দ্রশেখর। গৌড়ের রাজা বিশ্বম্ভর শূর সমুদ্রপথে এই মন্দিরে আসার চেষ্টা করেন। ত্রিপুরার রাজা ধন্যমানিক্য চেষ্টা করেছিলেন এই শিবলিঙ্গকে তাঁর রাজত্বে সরিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু, তিনি ব্যর্থ হন। তিনি অবশ্য এই মন্দিরের উন্নতিতে অনেক সাহায্য করেন।

পঞ্চসাগর (মা বারাহী) : উত্তরাখণ্ডের তনকপুর রেল স্টেশনের থেকে ১০০ কিমি দূরত্বে লোহাঘাট অঞ্চলে দেবীর নীচের দাঁত পতিত হয়। দেবী এখানে বারাহী নামে পরিচিতা। ভৈরবের নাম মহারুদ্র। রথযাত্রা এখানে বিশেষভাবে পালন করা হয়।

প্রভাস : গুজরাটের জুনাগড়ে সোমনাথ মন্দিরের কাছে এই পবিত্র তীর্থস্থান। এখানে দেবীর উদর পতিত হয়েছিল। দেবীর নাম এখানে চন্দ্রভাগা। ভৈরব বক্রতুন্ড রূপে পূজিত। তিনটি নদী এখানে মিলিত হয়েছে— হিরণ, কপিলা আর সরস্বতী। পুরাণ অনুযায়ী, চন্দ্র দক্ষের সাতাশ কন্যাকে বিবাহ করলেও সবচেয়ে ভালোবাসতেন রোহিণীকে। এই জন্য বাকী কন্যারা দক্ষকে অভিযোগ করলে দক্ষ চন্দ্রকে অভিশাপ দেন যে চন্দ্রের ঔজ্জ্বল্য কমে যাবে। তখন চন্দ্র শিবের তপস্যা করেন এই স্থানে ও অভিশাপ থেকে মুক্তি পান।

প্রয়াগ : উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে সঙ্গমের কাছে দেবীর হাতের আঙ্গুল পতিত হয়। দেবী এখানে ললিতা নামে পূজিতা। ভৈরবের নাম ভব। এই স্থানকে এমনিতেও তীর্থরাজ বলা হয় কারন এখানে তিনটি প্রধান নদী গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী মিলিত হয়। এই মন্দিরের এক বিশেষত্ব আছে। এখানে কোন মূর্তি নেই। একটা কাঠের দোলনা আছে। তার ওপরেই দেবীকে কল্পনা করে নেওয়া হয়। এখানে দেবীকে ‘ আলোপী মাতা ’ও বলা হয় কারণ দেবী এখানে অদৃশ্য।

কুরুক্ষেত্র : এখানে পড়েছিল সতীর ডান পায়ের গোড়ালি। তাঁর নাম এখানে সাবিত্রী বা স্থানু। শিব এখানে অশ্বনাথ। শক্তিপীঠের দেবী সাবিত্রী এখানে বিরাজিতা তবে তিনি দক্ষিণা কালীর মতো কালো বর্ণা, আবার মহাকালীর মতো খড়্গ, ত্রিশূল ধারিনী। এখানে বৈষ্ণব সাধক যেমন কুরুক্ষেত্র দেখতে এসে মা কালীর ভজনা করেন, তেমনি শাক্ত সাধক এসে এখানে মায়ের কৃপা প্রার্থনা করেন। বৈষ্ণব ও শাক্তের অভূতপূর্ব মিলন ক্ষেত্র এই কুরুক্ষেত্র। কুরুক্ষেত্র রেলস্টেশনের পাশেই শক্তিপীঠ অবস্থিত। মন্দিরের সামনে একটি কূপ। বলা হয় এখানেই সতী দেবীর অঙ্গ পতিত হয়েছিল। একটি শ্বেত পাথরের ডান পা কূপের ওপর বিরাজিত। দেবী এখানে ভদ্রকালী রূপে বিরাজিতা। তিনি ত্রিশূল, মুণ্ডমালা ধারণ করে আছেন। মস্তকে গলায় নানা অলঙ্কার শোভিতা।

ত্রিহুত : মধ্যপ্রদেশের মৈহার অঞ্চলে ত্রিহুত পাহাড়ে এই জাগ্রত তীর্থস্থান। এখানে দেবীর দক্ষিণ স্তন পতিত হয়। দেবী শিবানী নামে পূজিতা। ভৈরবের নাম চন্ড।

গোদাবরী : অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রীতে গোদাবরী নদীর তীরে কোটিলিঙ্গেশ্বর ঘাট মন্দির হল এই শক্তিপীঠ। এখানে দেবীর গন্ডদ্বয় (দুই গাল) পড়েছিল বলে পৌরাণিক বিশ্বাস। দেবী রাকিনী বা বিশ্বেশ্বরী নামে পূজিতা। ভৈরব দন্ডপাণি নামে পরিচিত। রাজামুন্দ্রীকে দক্ষিণ কাশী বলা হয়।

নয়না দেবী : হিমাচলপ্রদেশের বিলাসপুর জেলায় দেবীর দুই চোখ পতিত হয়। এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় নয়না দেবী মন্দির। দেবীর নাম মহিষমর্দিনী। ভৈরবের নাম ক্রোধিশ। এই মন্দির নির্মাণের পিছনে একটা গল্প আছে। এক রাখাল বালক রোজ দেখত যে এক সাদা গোরু একটা পাথরের ওপর বাঁট থেকে দুধ ঢালছে। এরপর সে স্বপ্নে দেবীর আদেশ পেল যে ওই পাথর তাঁর প্রতিমূর্তি। সে সব ঘটনা রাজা বীর চাঁদকে বললে রাজা নিজ চোখে যখন ঘটনাটা দেখলেন তখন তিনি এখানে মন্দির করে দিলেন।

শ্রীপর্বত : দেবীর দক্ষিণ নিতম্ব ছিটকে এসে পড়েছিল এখানে। দেবীর নাম এখানে সুন্দরী। শিবের নাম সুন্দরানন্দ। শ্রীপর্বত শ্রীশৈলমে অবস্থিত। শ্রীশৈলম নামটি শোনার সাথে সাথে এই স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটা চিত্র মনের স্মৃতিপটে আঁকা হয়ে যায়। কৃষ্ণা নদীর জলের স্রোত ও নদীতট সংলগ্ন প্রাকৃতিক শোভা মনকে মোহিত করে দেয়। পাহাড়ের গাত্রেই দেবীর মন্দির। গুন্টুর স্টেশন থেকে মিটার গেজ লাইনে শ্রীশৈলম যাওয়া যায়। লোক প্রবাদ মতে এখানে দেবীর অঙ্গ অর্ধ কৃষ্ণা নদীর জলে অল্প স্থলে পতিত হয়েছিলো। দেবী মন্দির দর্শন করে ভৈরব মন্দির একটু দূরে। শ্রীশৈলম পর্বতের প্রায় দেড় হাজার ফুট উঁচুতে ভৈরব মন্দির। দেড় হাজার বাঁধানো সিঁড়ি অতিক্রম করে ভৈরবের মন্দিরে যাওয়া যায়। এখানে কৃষ্ণা নদীকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাতালগঙ্গা’ নামে ডাকা হয়। এই মন্দির বিজয়নগরের রাজা হরিহর নির্মাণ করেছিলেন। এই হোলো শ্রীশৈলমের শক্তিপীঠ।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন